মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩৫ অপরাহ্ন
ক্রাইমসিন ডেক্সঃ
কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বরিশালে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় শ্মশান দিপালী উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে নগরের কাউনিয়ায় বরিশাল মহাশ্মশানে বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতি ও প্রদীপ প্রজ্বলন করেছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
তারা মৃত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় প্রতিবছরের মতো এবারও জমায়েত হয়েছেন পূজা-অর্চনার জন্য।
স্বজনরা মনে করেন, প্রয়াতদের সমাধিতে পূজা-অর্চনা করলে তাদের আত্মা শান্তি পায়। পাশাপাশি এ সময় মৃতদের পছন্দের খাবার সমাধিতে রেখে উৎসর্গ করা হয়। তাই স্বজনদের সমাধিতে কেউ মোমবাতি, প্রদীপ প্রজ্বালন করেন। আবার কেউ কেউ মৃত ব্যক্তির পছন্দের খাবার দিয়ে নৈবেদ্য সাজিয়ে স্মরণ ও আত্মার শান্তি কামনা করেন।
এদিকে মৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা যারা দেশে থাকেন না, সেসব মৃত ব্যক্তিদের সমাধিগুলোকে কমিটির পক্ষ থেকে আলাদা রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সমাধিগুলোতে শ্মশান কমিটির উদ্যোগে দিপালী উৎসবের দিন সন্ধ্যায় মোমবাতি, ধূপকাঠি ও প্রদীপ প্রজ্বলন করা হয়। তবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ছাড়াও শ্মশানে অনেকেই দিপালী আয়োজন দেখতে আসেন।
বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব সাংবাদিক সুশান্ত ঘোষ জানান, বরিশাল নগরের কাউনিয়ায় মহাশ্মশানটি প্রায় ২০০ বছর আগে ৫ একর ৯৬ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। নতুন পুরানো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা ও ১০ হাজার কাঁচা মঠ রয়েছে। এছাড়া ৯০০ মঠ রয়েছে যাদের স্বজনরা এই দেশে নেই, সেসব মঠ হলুদ রং করা হয়েছে। স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবছর শ্মশান দিপালীতে মোমবাতি প্রজ্বলন করা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, কালীপূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশীর পুণ্য তিথিতে প্রতিবছর সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রিয়জনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে জ্বালানো মোম বা প্রদীপের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো শ্মশান। পাশাপাশি প্রয়াত স্বজনদের সমাধিতে দেওয়া হয় ফুল ও প্রয়াতের পছন্দের নানা ধরনের খাবার। ভূত চতুর্দশীর পুণ্য তিথি অনুযায়ী এই শ্মশানে চলে ‘শ্মশান দিপালী’। তিথির কারণে কোনো কোনো সময় দুই দিনব্যাপীও শ্মশান দিপালী পালিত হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, আমরা জেনেছি, বরিশাল ছাড়া আর কোনো স্থানে এই ‘শ্মশান দিপালী’ পালনের রেওয়াজ ছিল না। এখানে আয়োজিত ‘শ্মশান দিপালী’ উপমহাদেশের সর্বপ্রথম ও সর্ববৃহৎ।
৬১ হাজারের অধিক সমাধির এ মহাশ্মশানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে আগে থেকেই। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবসহ সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। পাশাপাশি শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন শ্মশান দিপালী উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব বিজয় ভক্ত।